বিদেশি সিনেমায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরো কথা জানালেন
যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত নয়, এমন সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে এ ধরণের শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য দায়িত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। একই সাথে দাবি করেছেন যে, এই শুল্ক আরোপের কারণ হলো আমেরিকার সিনেমা শিল্প দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্য দেশগুলোর ‘সমন্বিত প্রচেষ্টা’কে দায়ি করে বলেন, তারা সিনেমা নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে নানা ধরনের প্রণোদনা অফার করছে এবং এটিকে তিনি ‘জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’ বলে বর্ণনা করেন।
“আমরা আমেরিকায় বানানো সিনেমাকে আবার মহান করতে চাই,” তিনি লিখেছেন তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মি. ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন।
তার যুক্তি হলো, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াবে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যদিও এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি এক ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যে পড়েছে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এবার শপথ নেয়ার আগেই ট্রাম্প তিন চলচ্চিত্র তারকা- জন ভইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্টালোনকে বিশেষ দূত নিয়োগ করেছিলেন। তাদের কাজ ছিলো, হলিউডের ব্যবসার সুযোগকে প্রমোট করা। ট্রাম্পের মতে ‘এটি [হলিউড] মহান কিন্তু সমস্যাসংকুল জায়গা’।
“তারা আমার দূত হিসেবে কাজ করবেন যার উদ্দেশ্য হলো হলিউডকে ফিরিয়ে আনা, যেটি গত চার বছরে ব্যাপক ব্যবসা হারিয়েছে।
বৃহৎ, ভালো এবং আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী,” ট্রাম্প তখন লিখেছিলেন এটি। সিনেমা শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রডপ্রো-এর মতে, বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা তৈরির কেন্দ্র।
এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেশটি গত বছর সিনেমা তৈরিতে প্রায় সাড়ে চৌদ্দ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।
বিপরীতে এই খাতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য ওই একই সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।
গত এপ্রিলে চিন বলেছে, দেশটিতে আমেরিকান সিনেমার প্রবেশের জন্য যে কোটা ঠিক করা আছে, সেটি তারা কমিয়ে দিতে যাচ্ছে। “চিনের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শুল্কের অপব্যবহারের ভুল সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই আমেরিকান সিনেমার দর্শক কমাতে ভূমিকা রাখবে,” চীনে সিনেমা প্রশাসন বলেছে।
“আমরা বাজার নীতি অনুসরণ করবো, দর্শকের পছন্দকে সম্মান করবো এবং ধীরে ধীরে আমেরিকান ফিল্ম আমদানি কমাবো”। ট্রাম্প শুল্ক ব্যবহার করে চীনের ওপর কঠিন আক্রমণ করেছেন। চিন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন।
তার প্রশাসন বলছে, কিছু চিনা পণ্যে শুল্ক ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। অন্য দেশগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের দশ শতাংশের শুল্ক মোকাবেলা করছে। এর চেয়ে বেশি শুল্ক জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা আছে।
রোববার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি চিনসহ অনেক দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন।
তবে চিনা প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলার কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে কোনো বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন ‘হতে পারে’। তবে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
এর আগে চিনের ওপর শুল্ক কমিয়ে আনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। “এক পর্যায়ে আমি এটি কমিয়ে আনবো। কারণ এটা ছাড়া আপনি তাদের সাথে ব্যবসা করতে পারবেন না।
আর তারা ব্যবসা করতে চায়,” তিনি এনবিসিতে প্রচারিত এক সাক্ষাতকারে একথা বলেছেন। তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
Comments
Post a Comment