শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকায়
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঘোড়াপাখিয়া এর প্রশাসনের নাকের ডগায় মাটিকাটা অব্যাহত
মোঃ হারুন-অর-রশীদ, শিবগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতাঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের পদ্মার দুর্গম চর থেকে প্রশাসনের নাকের ডগায় মাটিকাটা অব্যাহত থাকলেও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ কয়েক বছর আগে আগ্রাসী পদ্মা নদীর ভাঙ্গন রোধে বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প গড়ে ওঠা ৫ নাম্বার স্পার বাঁধের উপর দিয়ে বিকট শব্দে চলাচল করছে মাটি ভর্তি ট্রাক্টর। এক ঘণ্টায় অন্তত ৩০ টি মাটি ভর্তি ট্রাক্টর আসতে দেখা গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের পদ্মার দুর্গম চর থেকে মাটি কাটছে দুটি এক্সকাভেটর। মাটি নিয়ে আসছে ট্রাক্টরের করে। সেখানে ৩০ থেকে ৩২টি ট্রাক্টর মাঠে আনানেয়া করছে। প্রতিটি ট্রাক্টর ৫ নাম্বার বাঁধের স্পারের উপর দিয়ে যাচ্ছে পাশের ইটভাটায়। পদ্মা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা পদ্মা-১, পদ্মা-২ সুন্দরপুর ইউনিয়ন গড়ে ওঠা নোভা, হিরো, য়োজ সহ বিভিন্ন ইটভাটায় এসব মাটি বিক্রি হচ্ছে। মাটিগুলো স্টক করে রাখা হচ্ছে ইটভাটায। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময় নদী এই এলাকার আরো কাছাকাছি বইত। পরে বাঁধ নির্মাণ করায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে। এলাকায় চর জেগে উঠে। বিস্তীর্ণ এলাকার চরের জমিতে চাষিরা ধান, গম সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করেন। কিন্তু মাটি মাফিয়ারা চাষের জমি কেটে ফেলায় আলগা হয়ে যাচ্ছে মাটি। প্রায় 20 ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার ফলে পাহাড় ভেঙ্গে নদী এগিয়ে আসছে জনবসতির দিকে। সরোজমিন ঘুরে দেখা গেগছ, বর্ষা মৌসুম আসলে আগ্রাসী পদ্মা ভাঙ্গনে মেতে উঠে। গত বছর ও পদ্মা নদীতে তলিয়ে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাংগা ইউনিয়নের গোয়াল ডুবি গ্রাম। পদ্মা নদীর ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও থামছেনা পদ্মার চর থেকে মাটি কাটা। মাটি খেকোরা অবাধে কাটছে পদ্মার চরের মাটি। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক মাস মাটিকাটা বন্ধ থাকে। বন্যার পানি নেমে গেলে শুরু হয় মাটি কাটার হিড়িক। একদিকে যেমন হারিয়ে যাচ্ছে চাষীদের ফসলের জমি, তারপর ও পাহাড়ের মাটি কেটে নেয়া ই নদীতে পানি বাড়লেই দেখা দেই ভাঙ্গন। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিতে দুর্গম এলাকার জমি বেছে নেন মাটি ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে- মাটি মাফিয়ারা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ম্যানেজ করে অবাধে কেটে নিচ্ছে পদ্মার পাড় অঞ্চলের মাটি। জানা গেছে শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের সহকারি ভূমি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে পদ্মা নদীর ৫ নং বাঁধ এলাকায় এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটছে রামচন্দ্রপুর হাট এলাকার জিয়ারুল (জিয়া মেকার) ও আঃ মালেক। সদর উপজেলার শাহীন, শফিক, তাবজুল ও সুমনসহ অনেকই এই কারবারের সাথে জড়িত। বর্ষা মৌসুম বাদে সারাবছরে চলে এই কারবার। মাটির এই কারবারকে ঘিরে স্থানীয় মানুষদের ক্ষোভ বাড়লে চোখে দেখানো ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানো হয়। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি বলেন,কি ভাবে? কোথায় কোথায় মাটি কাটা হচ্ছে, তা নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments
Post a Comment