জেগে উঠল সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরনো শহর
রাজপ্রাসাদ, দুর্গ সবই আছে শহরে। প্রায় তিন হাজার চারশ’ বছর আগের এই শহরটি এক সময় হারিয়ে যায় ইরাকের সবচেয়ে বড় জলাধারের নিচে। মারাত্মক খরায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় আবারও জেগে উঠেছে শহরটি। গত সোমবার ইরাকের প্রতœতাত্তি¡কেরা এ তথ্য জানিয়েছেন। ব্রোঞ্জ যুগের স্থাপনাটি দীর্ঘকাল টাইগ্রিস নদীর পানিতে তলিয়ে ছিল। এই বছরের শুরুতে শহরটি জেগে ওঠে। এরপরই মসুল বাঁধের জলাধার পানিতে ভরে ওঠার আগে প্রাচীন শহরটিতে খোড়াখুড়ি শুরু করেন গবেষকরা। ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের প্রাচীন শহরটির জায়গা এখন কেমুন নামে পরিচিত। জার্মান ও কুর্দি প্রতœতাত্তি¡কদের একটি দল সেখানে খনন কাজ চলছে। গবেষকদের ধারণা মিত্তানি সাম্রাজ্যের আমলের স্থাপনাটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। ১৫৫০ থেকে ১৩৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এই সাম্রাজ্য সচল থেকেছে।
এসব তথ্য জানিয়েছেন, জার্মানির ফ্রেইবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ার ইস্টার্ন আর্কিওলোজি বিভাগের জুনিয়র অধ্যাপক ইভানা পুলজিজ। তিনি গবেষক দলের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। পুলজিজ বলেন, ‘শহরটি সরাসরি টাইগ্রিসের উপর অবস্থিত হওয়ায় এটি মিত্তানি সাম্রাজ্যের মূল অঞ্চল, যা বর্তমান উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় অবস্থিত ছিল এবং সাম্রাজ্যের পূর্ব পরিধিকে সংযুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।’ দুর্গ বেষ্টিত জায়গাটিতে টাওয়ার, আকর্ষণীয় প্রাসাদ এবং আরও বড় কয়েকটি ভবনের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে। প্রতœতাত্তি¡কেরা বলছেন, ধারণা করা হচ্ছে স্থাপনাটি প্রাচীন জাখিকু শহর, যা এক সময়ে এই অঞ্চলের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল। গবেষকরা বলছেন, দুর্গটির দেয়াল কয়েকটি জায়গায় কয়েক মিটার পর্যন্ত উঁচু। রোদে শুকানো মাটির ইটে তৈরি এসব দেওয়াল বিস্ময়করভাবে এখনও ভালোভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। ব্রোঞ্জ যুগের শহরটি ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়। প্রত্নতাত্তি¡কেরা জানিয়েছেন প্রায় ১৩৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ধারণা করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেয়ালের ওপরের অংশ ধসে পড়ায় টিকে যাওয়া ভবনগুলো চাপা পড়ে। ফলে বছরের পর বছর ধরে এগুলো তুলনামূলক আরও ভালোভাবে সংরক্ষিত থেকেছে।
তথ্যসূত্র: এনবিসি নিউজ, বাংলাট্রিবিউন
Comments
Post a Comment