ভারত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে পদ্মা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে আগ্রাসী এ নদীতে বিলীন হয়েছে মানুষের আবাদি জমি, ভিটা মাটিসহ সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য স্থাপনা। বাড়ি ঘর জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে স্থানান্তরিত হয়েছেন বহু পরিবার। পদ্মার ভাঙনের ফলে শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর, পাঁকা ও দুর্লভপুর এই তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিশেষ করে ভাঙনের কবলে পড়ে উজিরপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ শতাংশ বাসিন্দা পার্শ্ববর্তী পাঁকা, দুর্লভপুর ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বসবাস শুরু করেছেন। এছাড়াও কিছু পরিবার শিবগঞ্জ পৌর এলাকায় স্থায়ী আবাসনও গড়েছেন। এক ওয়ার্ডের বাসিন্দা অন্য ওয়ার্ডে স্থায়ী আবাসন বানিয়ে বসবাস করছেন। এতে নদী তীরবর্তী এলাকার নির্বাচনী এলাকা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) নির্বাচনী সীমানা নিষ্পত্তির আবেদন চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছিলেন উজিরপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম। আবেদনের একটি অনুলিপি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছেও জমা দিয়েছিলেন তিনি। রফিকুল ইসলামের জমা দেওয়া আবেদন থেকে জানা গেছে, নদী ভাঙনের ফলে সীমানা বিলুপ্তি হয়ে বর্তমানে পাঁকা ইউনিয়নের ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড। দুর্লভপুর ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা নিয়ে জটিলতা আছে।
ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে নৌকায় করে বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে একটি পরিবার
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে নির্বাচনী এলাকা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করে নির্বাচনী সীমানা নিষ্পত্তির আবেদন করি। এ বিষয় নিয়ে কয়েকরার জেলা-উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা কোনো সন্তোষজনক উত্তর দেয়নি। এখনও ওই সব স্থানে নির্বাচনী এলাকা নিয়ে জটিলতা আছে।’খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমানা জটিলতায় পদ্মা পাড়ের দুর্লভপুর ইউনিয়নে দু-দুবার নির্বাচন বাতিল হওয়ারও নজির আছে। ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পরেও সীমানা জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত হয়। একই ঘটনায় চলতি বছরের ২৬ জুন দ্বিতীয় বারের মতো হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
বাড়ি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন পদ্মা পাড়ের অনেক বাসিন্দা
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তাসিনুর রহমান বলেন, ‘দুর্লভপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সংশোধনের আবেদন করেন দুর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজিব। সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সংশোধন না হওয়ায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উপ-সচিব আতিয়ার রহমানের স্বাক্ষরিত একটি আদেশের প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।’ জেলার সুধীজনরা বলছেন, সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি হলে না হলে নাগরিকরা তাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবেন না। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
Comments
Post a Comment