যুদ্ধের ফলে দারিদ্র্য বৃদ্ধির হার চরমের চেয়ে বেশি
ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পাঁচ মাসে পড়েছে। এর জেরে সারা বিশ্বে বেড়েছে খাদ্য ও জ্বালানির দাম। যার ফলে যুদ্ধের প্রথম তিন মাসেই সমস্ত দেশ মিলিয়ে মোট ৭.১ কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্রসীমার নীচে তলিয়ে গিয়েছেন বলে জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্ট। বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) এই সংক্রান্ত রিপোর্টটি প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই মানুষদের মধ্যে ৫.১৬ কোটির দৈনিক খরচের ক্ষমতা এখন ১.৯০ ডলার বা তারও কম। আরও দু’কোটি মানুষের ক্ষেত্রে তা ৩.২০ ডলার। সব মিলিয়ে গোটা পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশের বসবাস এখন দারিদ্রের বৃত্তে। জাতিসংঘের ব্যাখ্যা, অতিমারির ১৮ মাসে ১২.৫ কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্রসীমার নীচে চলে গিয়েছিলেন। আর ৭.১ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম তিন মাসেই। অর্থাৎ, এই দফায় দারিদ্র বৃদ্ধির গতি অতিমারির চেয়েও বেশি। ইউএনডিপির প্রশাসক আখিম স্টেনারের কথায়, ‘‘জীবনধারনের খরচ যে ভাবে বেড়েছে তা এখনকার প্রজন্মের কাছে নজিরবিহীন। ফলে এ বারের সমস্যা খুবই বিপজ্জনক।’’ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলেছে আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। অন্য দিকে, রাশিয়ার আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের বহু সমুদ্রবন্দর দিয়ে বাণিজ্য এখন বন্ধ।
এই জোড়া কারণে খাদ্য এবং জ্বালানির সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। মাথাচাড়া দিয়েছে সেগুলির দাম। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছে দরিদ্র দেশগুলি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিচু আয়ের দেশগুলিতে পরিবারগুলির মোট রোজগারের ৪২% খরচ হত খাদ্য সংগ্রহ করতে। কিন্তু যুদ্ধের পর গম, চিনি-সহ সমস্ত অত্যাবশ্যক খাদ্যসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই অনুপাতও বেড়েছে। যা সঙ্কট বাড়িয়েছে। এ দিন প্রকাশিত অন্য একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ২৩০ কোটি। যুদ্ধে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। স্টেনারের বক্তব্য, এই সমস্যার সমাধানের জন্য যথেষ্ট সম্পদ সারা বিশ্বে নেই এমনটা নয়। কিন্তু এর জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজের ইচ্ছেটাই দেখা যাচ্ছে না। তাঁর পরামর্শ, সকলকে এক হারে জ্বালানিতে ভর্তুকি না দিয়ে দরিদ্র মানুষদের নগদে তা দেওয়া যেতে পারে। সম্পদশালী দেশগুলি বাড়াতে পারে দরিদ্র দেশগুলির ঋণ শোধের সময়সীমাও। দান হিসেবে নয়, নিজেদের স্বার্থেই। যাতে আর্থিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা আরও না বাড়ে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
bhat de (Give me Rice)
ReplyDelete