বিশ শতকের আশির দশকে ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে ২০ জনকে খুন করেছিলেন ফুলন দেবী এবং তার দলের সদস্যরা। ওই হত্যাকাণ্ডের ৪৩ বছর পর সাজা ঘোষণা করলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কানপুরের একটি আদালত।
ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমানে দু’জন বেঁচে আছেন। তার মধ্যে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যজনকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এবং দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের বেহমাই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ঠাকুর সম্প্রদায়ের উচ্চবর্ণের পুরুষদের দ্বারা দলগতধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ফুলন দেবী।
আর দলগতধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে ঠাকুর সম্প্রদায়ের ২০ পুরুষকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলেন ফুলন দেবী এবং তার দলের সদস্যরা।
ওই ঘটনায় ভারত জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। ঘটনার চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের ওই সময়ের মুখ্যমন্ত্রী ভিপি সিং।
এ ঘটনায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তবে বিচার চলাকালে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে গণহত্যার সাথে জড়িত মাত্র দু’জন বেঁচে আছেন।
এদের একজন শ্যামবাবু কেওয়াত এবং অন্যজন বিশ্বনাথ। শ্যামবাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন অতিরিক্ত জেলা বিচারক অমিত মালব্য এবং দ্বিতীয়জন বিশ্বনাথকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
এই মামলা চলাকালে ২৮ জন সাক্ষীরও মৃত্যু হয়েছে। ২০১২ সালে কানপুরের ওই আদালতে চার্জ গঠন হয়েছিল। অন্যদিকে, ওই হত্যাকাণ্ডের পরেই ফুলন দেবীর নাম চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর একটি সাধারণ ক্ষমার অধীনে গণহত্যার দু’বছর পর মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন।
পরে লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন ফুলন দেবী। তার জীবনী নিয়ে লেখা বইটির নাম ছিল ‘ইন্ডিয়াস ব্যান্ডিট কুইন: দ্য ট্রু স্টোরি অফ ফুলন দেবী’।
এরপর থেকে ফুলন দেবী ‘ব্যান্ডিট কুইন’ নামেও পরিচিত হয়েছিলেন। পরে ২০০১ সালে ফুলন দেবীকে গুলি করে হত্যা করে এক আততায়ী। ওই সময় তিনি লোকসভার সদস্য ছিলেন। তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি
Comments
Post a Comment