প্রথমবার ড্রোন প্রতিযোগিতায় মানব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিলো এআই
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের দক্ষতাকেও ছাড়িয়ে গেছে এটি। ডেটা প্রসেসিং, প্যাটার্ন রিকগনিশন, অপ্টিমাইজেশনের মতো কাজগুলোতে এআইর কার্যকারিতা অবাক করেছে সবাইকে।
এবার ড্রোন পরিচালনায় তিনজন মানব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দিয়েছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। সম্প্রতি জুরিখ ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তৈরি সুইফট এআই’র সঙ্গে ড্রোন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তিনজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাইলট। এতে ২৫টি রেসের মধ্যে ১৫টিতেই জয় পায় সুইফট। শুধু তা-ই নয়, প্রতিযোগিতায় দ্রুততম সময়ে পথ অতিক্রমের রেকর্ডও ছিল সুইফটের।
এসময় তার ড্রোনটির গতিবেগ উঠেছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। সুইফট নির্মাতা টিমের গবেষক এলিয়া কউফম্যান বলেন, এই প্রথমবার কোনো বাস্তব খেলায় মানব চ্যাম্পিয়নকে পরাজিত করেছে এআই-চালিত রোবট। এই প্রতিযোগিতায় একটি আবদ্ধ জায়গায় কয়েকটি ছোট গেটের মধ্যে দিয়ে দ্রুত উড়তে হয়েছে ড্রোনগুলোকে। পাইলটরা ড্রোনের সামনে লাগানো ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি সব দেখতে পাচ্ছিলেন।
এতে এআই’র সঙ্গে প্রতিযাগিতায় নেমেছিলেন তিন চ্যাম্পিয়ন টমাস বিটমাটা, মারভিন শ্যাপার এবং অ্যালেক্স ভ্যানোভার। প্রতিযোগিতার আগে এক সপ্তাহ অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছিলেন তারা। একই সময়ে সুইফটও একটি সিমুলেটেড পরিবেশে প্রশিক্ষণ নেয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণকালে কয়েকশবার ব্যর্থ হয়েছিল সুইফট। কিন্তু যেহেতু সেটি সিমুলেশন ছিল, তাই বাহ্যিক কোনো ক্ষতি হয়নি ড্রোনটির।
কেবল প্রক্রিয়াটি ফের শুরু করতে হতো গবেষকদের। প্রতিযোগিতার বিশ্লেষকরা দেখেছেন, রেস শুরুর ক্ষেত্রে মানব পাইলটদের তুলনায় ধারাবাহিকভাবে দ্রুততর ছিল সুইফট এআই। তবে এটি অপ্রতিরোধ্য ছিল না। প্রায় ৪০ শতাংশ রেসেই মানুষের কাছে হেরে গেছে এআই এবং বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটিয়েছে। দেখা গেছে, পরিবেশে পরিবর্তনের প্রতি সুইফট এআই বেশ সংবেদনশীল; যেমন- আলো। তবে এই প্রতিযোগিতায় মূল যে অগ্রগতি স্পষ্ট হয়েছে, সেটি হলো- সুইফট অ্যারোডাইনামিক টার্বুলেন্স, ঝাপসা ক্যামেরা এবং আলোর পরিবর্তনের মতো বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারে। কউফম্যানের দাবি, এ ধরনের এআই ড্রোনগুলো দিয়ে আগুন লাগা ভবনে আটকেপড়া লোকদের অনুসন্ধান বা জাহাজের মতো বড় কাঠামোগুলো ঝুঁকিমুক্তভাবে পরিদর্শন সম্ভব। তবে এই প্রযুক্তি এখনই যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহারে বড় কোনো পরিবর্তন আনবে বলে বিশ্বাস করেন না বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ
Comments
Post a Comment