ইজরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। প্যালেস্টাইনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে তাঁবু টাঙিয়ে বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছে ইউরোপের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার লন্ডনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েকশো শিক্ষার্থী। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একগুচ্ছ দাবি উত্থাপন করা হয়। ইসরায়েলকে সব ধরনের অর্থায়ন বন্ধ, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ নীতি সংস্কার, ইসরায়েলকে বর্জন, গাজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনর্নির্মাণসহ এতে বেশ কিছু দাবি রয়েছে। অক্সফোর্ড অ্যাকশন ফর প্যালেস্টাইন ও কেমব্রিজ ফর প্যালেস্টাইন এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েল সরকারকে আর্থিক ও নৈতিক সমর্থন দেয়া বন্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্যালেস্টাইনিদ
ইংরেজ ক্যাপ্টেন কক্স সাহেবের বাংলো
আপনি কি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসেরচর গ্রামে যাবেন? তাহলে কক্সবাজারের রামু উপজেলার চৌমুহনী স্টেশন থেকে দক্ষিণ দিকে দুই কিলোমিটার পথ পার হলেই সেই গ্রাম পেয়ে যাবেন। কেউ যদি জানতে চায়, তাহলে বলবেন, টিনের একটি বাংলোবাড়িতে যেতে চান। যারা জানে না, তাদের কাছে খোলাসা করে বলতে পারেন, বাড়িটি ইংরেজ ক্যাপ্টেন ‘হিরাম কক্স’-এর বাংলোবাড়ি। তারপর বেশ রহস্যময় ভঙ্গিতে ফিসফিস করে বলতে পারেন, ‘বাড়িটির বয়স এখন ২২০ বছর।’ হ্যাঁ, আমরা সেই হিরাম কক্সের কথাই বলছি, যাঁর নামে এখন এই কক্সবাজার জেলা।
১৭৮৪ সালের দিকে আরাকান দখল করে নিয়েছিলেন বার্মার রাজা বোধাপায়া। রাজার আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রায় ১৩ হাজার আরাকানি এদিকে চলে আসে, আশ্রয় নেয় পালংকীতে। বলে রাখি, কক্সবাজারের প্রাচীন নাম কিন্তু পালংকী। সমুদ্র ও জঙ্গলঘেরা পালংকীতে আশ্রিত লোকজনকে পুনর্বাসনের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে সেখানে নিয়োগ দিয়েছিল। হিরাম কক্স পালংকী এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন একটি বাজার। প্রথম প্রথম এ বাজার ‘কক্স সাহেবের বাজার’ নামে পরিচিত ছিল। পর্যায়ক্রমে ‘কক্স-বাজার’ এবং ‘কক্সবাজার’ নামের উৎপত্তি ঘটে। জায়গাটি ‘প্যানোয়া’ নামেও পরিচিত। ‘প্যানোয়া’ শব্দের অর্থ ‘হলুদ ফুল’। তখন কক্সবাজার হলুদ ফুলের রাজ্য ছিল।
হিরাম কক্স তো দায়িত্ব নিয়েছিলেন শরণার্থী পুনর্বাসনের। কিন্তু তাঁকে তো রাত যাপন করতে হবে, করতে হবে দাপ্তরিক কাজ! এ জন্যই রামুতে নির্মিত হয় এই বাংলোবাড়ি। ১৭৯৯ সালে বাংলোবাড়িতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ক্যাপ্টেন কক্সের মৃত্যু হয়। তাঁর মরদেহ নেওয়ার জন্য চকরিয়ার মেধাকচ্ছপিয়া এলাকার বড়খালে জাহাজ নিয়ে এসেছিলেন কক্স সাহেবের স্ত্রী ম্যাডাম কক্স পিয়ার। ‘ম্যাডাম কক্স পিয়ার’ লোকমুখে হয়ে যায় ‘মেধাকচ্ছপিয়া’। এখন মেধাকচ্ছপিয়া দেশের অন্যতম জাতীয় উদ্যান। কক্সবাজার শহর থেকে রামুর ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের বাংলোবাড়ির দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। এখানে পেয়ে যাবেন ৫৫ বছর বয়সী বদিউজ্জামানকে।
৩০ বছর ধরে তিনি এই বাংলো পাহারা দিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে যখন বাংলোর চারধারে বেড়াতে বের হবেন, তখন বিস্মিত হবেন জেনে যে এই বাড়িই ২২০ বছর আগে তৈরি ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের বাংলোবাড়ি, তা অনেকেই জানে না। এবার নিবিড়ভাবে লক্ষ করলে দেখবেন, এই বাড়ির সঙ্গে যে এ রকম ঐতিহাসিক ঘটনার সংযোগ আছে, সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো স্মৃতিফলক নেই। বাংলোটি ‘জেলা পরিষদ বাংলো’ নামে অধিক পরিচিত। দুই ঘরের এই বাংলোতে আছে ব্রিটিশ আমলের একটি খাট, চেয়ার-টেবিল। এই বাংলোয় কেউ রাত যাপন করতে চাইলে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য প্রতি রাতের জন্য ২০০ টাকা, পর্যটকদের জন্য ৪০০ টাকা দিতে হয়।
বেসরকারি নাগরিক সংগঠন ‘সিভিল সোসাইটিজ ফোরাম-কক্সবাজার’–এর সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরীর সঙ্গে যদি দেখা হয় আপনার, দেখবেন তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছেন, ‘২২০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাংলোটি অযত্ন–অবহেলায় পড়ে আছে। বাংলোর ছাউনি পরিবর্তন ছাড়া এ পর্যন্ত ঘরের সংস্কার হয়নি। টাঙানো নেই হিরাম কক্সকে নিয়ে কোনো সাইনবোর্ড কিংবা স্মৃতিফলক। বাংলোটি ‘হিরাম কক্স–এর বাংলোবাড়ি’ হিসেবে খ্যাত হলে রামুর পর্যটনে যোগ হবে নতুন মাত্রা।’ কথাটা আপনারও ঠিক বলে মনে হবে।
220??
ReplyDelete