বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে । পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বি জ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ (ফ্লাইট সেফটি)। এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি থাকবেন সদস্য হিসেবে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মহাব্যবস্থাপক (কর্পোরেট সেফটি অ্যান্ড কোয়ালিটি), চিফ ইঞ্জিনিয়ার (কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স), উপ-মহাব্যবস্থাপক (সিকিউরিটি), উপ-মহাব্যবস্থাপক (কার্গো-রপ্তানি) এবং উপ-ব্যবস্থাপক (ইন্স্যুরেন্স)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ চিহ্নিত করা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ, দায়-দায়িত্ব নিরূপণ এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তৈরি করবে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওর কাছে তদন্ত...
আট মাসে ফিরলেন ৮০০ নারী গৃহকর্মী
সৌদি আরবে যে বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন ডালিয়া, সেখানে প্রায় নিয়মিতই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন তিনি। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একদিন ওই বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। চেষ্টা সফল হয়নি উল্টো হাত-পা ভেঙে দুই মাস ভর্তি ছিলেন রিয়াদের এক হাসপাতালে। এরপর তাঁর ঠাঁই হয় বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে (নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র)। সেখান ছিলেন চার মাস। দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন তিনি। সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যাওয়া মোট ১০৯ জন সোমবার রাতে দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা প্রায় সবাই শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের সহায়তা দিতে কাজ করছে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি। তাঁদের তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন প্রায় ৮০০ নারী কর্মী। এর আগে গত বছর ফিরেছেন আরও ১ হাজার ৩৫৩ জন নারী গৃহকর্মী। তবে যেসব নারী ঢাকায় বিমানবন্দরে নামার পর নিজ দায়িত্বে চলে যান, তাঁদের হিসাব নেই ব্র্যাকের কাছে। কাজের নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় সৌদি আরব থেকে প্রায় প্রতি মাসেই নারী গৃহকর্মীরা ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মনে করছেন ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির কর্মকর্তারা। সোমবার রাতে ফেরা ডালিয়া সৌদি আরবে ছিলেন ১৪ মাস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সেফহোমে একসঙ্গে ৪০০ জনের মতো ছিলেন। সবাই নানা রকম নির্যাতনের শিকার হয়ে সেখানে আশ্রয় নেয়। কাজ করতে গিয়ে অনেকে মারধর ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। সেফহোম থেকে তাঁরা ২২ জন একসঙ্গে দেশে ফিরেছেন। নির্যাতনের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে নারী কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয় বলে প্রথম আলোকে জানান বিএমইটির পরিচালক (কর্মসংস্থান) ডি এম আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে দায়ী এজেন্সির কাছ থেকে এ বছর প্রায় ২৬০ জন নারীকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে বিদেশে যাওয়া নারীদের প্রায় ৮০ শতাংশের গন্তব্য সৌদি আরব। সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইং থেকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ২ হাজার ২২২ নারী গৃহকর্মী। আরও অনেকেই দেশে ফেরার জন্য সেফহোমে অবস্থান করছেন। নির্যাতনের অভিযোগে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ করে দিলে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে সৌদি আরব। এরপর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ নারী কর্মী গেছেন দেশটিতে। বেসরকারি খাতে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ফিরে আসা নারী কর্মীদের সব অভিযোগ সত্য নয়। তদন্ত করা হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাঁর দাবি, বিদেশে গিয়ে আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেকে ফিরে আসছেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে জানায়, ২০০০ সাল থেকে শুরু করে ২০১৭ পর্যন্ত প্রতিবছর বিদেশে নারী কর্মীর অভিবাসন বেড়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে হঠাৎই তা কমে যায়। ২০১৭ সালে সৌদিতে ৮৩ হাজার ৩৫৪ নারী কর্মী গেলেও গত বছর গেছেন ৭৩ হাজার ৭১৩ জন। আর এ বছর জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে গেছেন ৪৪ হাজার নারী। অভিবাসন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৌদিতে নারী কর্মী পাঠানোর আগে এক মাসের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক থাকলেও তা মানা হয় না। ভাষার সমস্যাও রয়েছে। ফিরে গৃহকর্মী খাতে নারীদের না পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসা নারীরা। এ বিষয়ে মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী প্রথম আলোকে বলেন, নারী কর্মীদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে, তা পাচারের মতো। গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে যৌনকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের কোনো নজরদারি নেই সেখানে। যাঁরা নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসছেন তাঁরা শুধু ভুক্তভোগী নন, সাক্ষীও। কিন্তু তারপরও কোনো বিচার হচ্ছে না।
- Get link
- X
- Other Apps
Labels
News
Labels:
News
- Get link
- X
- Other Apps
Comments

dukhojanok kahini
ReplyDelete