ফুটবল বিশ্বকাপের লড়াই শুরু আজ
বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ৩২ টি দেশ। সবারই লক্ষ্য গোল্ড কাপের দিকে। তবে চার বছরের জন্য মুকুট মাথায় করে রাখার তালিকায় মেসি-রোনালদো-নেইমার-বেনজেমাদের দেশ অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। তাই মরুর দেশ কাতারে রোববার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায় শুরু হবে শিরোপা লড়াই। আর এই লড়াই প্রথম মাঠে নামবে স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডর। শুরুর আগে থেকেই কাতার বিশ্বকাপ কতভাবেই না ব্যতিক্রম হয়ে গিয়েছে- মধ্যপ্রাচ্যে এবারই প্রথম বিশ্বকাপ, উত্তর গোলার্ধের শীতে প্রথম বিশ্বকাপ, যার জন্যে শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে ইউরোপীয় লীগগুলোকে বন্ধ রাখতে হয়েছে পিক সিজনে। আয়োজন স্বত্ব ঘোষণার পর থেকেই বিতর্ক এই বিশ্বকাপের আরেকটা অনন্য উপাদান। বিডিং নিয়ে কত সমালোচনা চলেছে; ঘুষ কেলেংকারি, ভোটচুরির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। স্বত্ত্বাধিকার এসেছে পশ্চিমাদের ভোটে হারিয়ে, দুর্নীতির অভিযোগের দামামা স্বাভাবিকের চাইতে মিডিয়ায় হয়তো একটু বেশিই বেজেছে। ভোটে যেভাবেই জিতুক, কাতার তো শক্তভাবে সবকিছুরই জবাব দিতে পারতো একটা সফল বিশ্বকাপ আয়োজন করেই। নির্মাণযজ্ঞে বিতর্কের অবকাশ না রাখা যেতো, মানবাধিকারের ইস্যুগুলো যাতে না আসে তা নিশ্চিত করা যেতো। বিশ্বের সামনে মুসলিম বিশ্বের ইতিবাচক দিকগুলো দেখানোর আদর্শ মঞ্চ ছিল এই বিশ্বকাপ; কিন্তু দাম্ভিকতা, আর পেট্রো-ডলারের ক্ষমতায় মোহাচ্ছন্ন কাতার সবকিছুকে অগ্রাহ্য করে নেতিবাচকতা দিয়ে মুড়িয়ে বিশ্বকাপের এন্তেজাম করেছে। বিশ্বকাপের স্পর্শমণিতে বিশ্বকর্মা হতে গিয়ে অচ্ছুৎ প্রতিপন্ন হয়েছে- যার হেতুতে অতিথি খেলোয়াড়দের মাঠের আলোচনার বাইরেও শুনতে হচ্ছে রাজনৈতিক প্রশ্নবাণ। তবে এ সব বিতর্কই মুছে যাবে কিক অফের সাথে সাথে। ঝড় উঠবে ফুটবল নিয়ে ইউরোপ, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার আনাচে কানাচে। আর তার সাথে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বিতর্ক তুঙ্গে উঠবে এই দেশের ৫৬০০০ বর্গমাইল জুড়ে। সেই উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপুক তরুণের দল, মাঠের উত্তেজনা অজস্র ঘরে নিয়ে আসুক উৎসবের বন্যা। আর জরার ক্লেশে ক্রমশ বন্দী হতে থাকা মানুষগুলোর কানে কিকঅফের বাঁশির শব্দটা এসে বিঁধুক প্রিয়জনের হাতের আঙুলের ডগাটুকুর শেষ স্পর্শের মতো; যাতে অতীতের স্মৃতিগুলো আবার ফেরত যায় মস্তিষ্কের অন্ধকোষ্ঠে, বিশ্বকাপকে উপলক্ষ করে জেগে উঠা হারানোর কষ্ট আবার অবলুপ্ত হয় চাপিয়ে রাখা শোকে। আর সবুজ মাঠে জোয়ার উঠুক শিল্পের বন্যার! হয়তো কারো হৃদয় পুড়বে এবারো, হয়তো কেউ এবারই পেয়ে যাবে সেই ২৪ ক্যারেট সোনায় মোড়া অমরত্বের ফিলোসফার’স স্টোন। মেঘ-ধোঁয়া-কুয়াশার চাদর ফুঁড়ে বের হওয়া সূর্যের রশ্মির মতো খেলে যাবে খুশির লহর। ফাইনাল শেষে যেই দলই সেই খুশির বানে ভেসে যাক, অমন বিজয় উদ্দাম নয়নঙ্গম করতে পারাই তো একটা সার্থকতা। কোভিড উত্তর যুগে বর্তমানটাই যখন সত্যযুগ- ফুটবল সেখানে অতিরিক্ত যোগ করুক উত্তেজনার তৃপ্তি। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিরন্তর সংগ্রামে এই বা কম কীসে?
আমরা খেলা দেখব ইনশাল্লা
ReplyDelete