বন্দুকবাজের গুলিবর্ষণে নিহত চিনা কৃষক-সহ ১১ আমেরিকায়
আত্মরক্ষার্থে যে কোনও নাগরিকের হাতে বন্দুক রাখার অনুমতি দেওয়া যে কত বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। নতুন বছরের শুরু থেকে বন্দুকবাজের দাপট আরও বেড়েছে। এই কয়েকদিনের মধ্যেই ছ-ছ’টি শুটআউটের ঘটনা ঘটল আমেরিকায়।
মঙ্গলবার একাধিক জায়গায় গুলিবর্ষণে প্রাণ হারালেন অন্তত ১১ জন। যদিও আততায়ীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। কড়াকড়ি করা হয়েছে অকুস্থলের নিরাপত্তা। কিন্তু এত ঘনঘন শুটআউটের ঘটনায় আতঙ্ক কাটছে না সাধারণে মানুষের। জানা গিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার হাফ মুন বে শহর ও হাইওয়ে ৯২-তে আলাদা দুটি শুটআউটের ঘটনায় মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম ঘটনাটি হাফ মুন বে শহরে। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজ আচমকা গুলি চালাতে শুরু করলে ৪ জনের মৃত্যু হয়। তাঁরা সেসময় নিজেদের ফার্মে কাজ করছিলেন।
জানা গিয়েছে, এঁরা সকলেই চিনা কৃষক। হত্যার দায়ে চিহ্নিত তাঁদেরই সহকর্মী ৬৭ বছরে ঝাও চুনলি। এরপর আরও খানিকটা দূরে ৩ জন প্রাণ হারান গুলিতে। সান ফ্রান্সিসকো থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দূরের হাইওয়ে ৯২-তে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। হাইওয়ের কাছেই ওই আততায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। সান মাতেওর কাউন্টি শেরিফ জানিয়েছেন, ”হাইওয়ে ৯২ ও হাফ মুন বে – দু’জায়গায় দুই পৃথক গুলিকান্ডের মূল আততায়ীকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি।
এই মুহূর্তে আর কোনও ভয় নেই।” কিন্তু তাঁর এই আশ্বাসে আতঙ্ক কাটছে না বাসিন্দাদের। গত ২২ তারিখ, ক্যালিফোর্নিয়ায় চিনা নববর্ষ উদযাপনের পার্টিতে হামলা চালায় সত্তরোর্ধ্ব এক আততায়ী। মুহূর্মুহূ গুলিবর্ষণে ঝাঁজরা হয়ে যান ১০ জন। আনন্দের পরিবেশ রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।
পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নিজের বন্দুকের গুলিতেই আত্মঘাতী হয় হামলাকারী। এরপর সোমবার ডেস মইনেস স্কুলে টার্গেট শুটিংয়ে ২ ছাত্র প্রাণ হারায়। আহত হন দু’জন। আমেরিকায় অপরাধের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের ২৪ দিনের মধ্যেই ৬ টি শুটআউটের ঘটনা ঘটেছে। যা হয়ত সর্বকালের রেকর্ড।
এর জন্য অনেকেই আমেরিকার বন্দুক নীতিকে দায়ী করেন। আত্মরক্ষার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র রাখার আবেদন করলেই অনুমতি মেলে। ফলে ১৮ ঊর্ধ্ব অনেক নাগরিকের কাছেই অত্যাধুনিক বন্দুক রয়েছে। ফলে তা প্রয়োগের জন্য যে কোনও সময় হামলা ঘটে চলেছে। প্রতি ক্ষেত্রে পুলিশ দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নিলেও পরিস্থিতির উন্নতি নেই। তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
Comments
Post a Comment