প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক, বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ আমদানি পণ্যের ওপর অন্তত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত এক শতাব্দীর মধ্যে এত উচ্চ শুল্ক আরোপ করেনি ওয়াশিংটন। বুধবার (২ এপ্রিল) গৃহীত এই সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। চিনের ওপর নতুনভাবে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ট্রাম্পের আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্কসহ বেইজিংয়ের জন্য সংখ্যাটি মোট ৫৪ শতাংশ। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক অস্ত্রের আঘাত থেকে নিরাপদ নয় দীর্ঘদিনের মার্কিন মিত্ররাও। যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০ শতাংশ এবং জাপানের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। শুল্কের ভিত্তি হার (বেইজ রেট) আগামী ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। আর উচ্চ পালটা শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ৯ এপ্রিল থেকে। মার্কিন অর্থনীতিবিদ ওলু সোনোলা বলেছেন, এই শুল্ক দীর্ঘদিন কার্যকর থাকলে, অর্থনৈতিক সমস্ত ভবিষ্যতবাণী জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিন।...
অল্পক্ষণের মধ্যেই আমি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললাম... রাজশাহী আদালতে জবানবন্দিতে বিপ্লবী ইলা মিত্র
রাজশাহী আদালতে ইলা মিত্র ইংরেজিতে লিখিত যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন তা থেকে তাঁর ওপর যে অত্যাচার হয়েছে সে বিষয়ে জানা যায়। তিনি তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, ‘বিগত ০৭.০১.৫০ তারিখে আমি রোহনপুর থেকে গ্রেপ্তার হই এবং পরদিন আমাকে নাচোল থানা হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু পথে পাহারাদার পুলিশরা আমার ওপর অত্যাচার করে। নাচোলে ওরা আমাকে একটা সেলের মধ্যে রাখে। সেখানে একজন পুলিশের দারোগা আমাকে এ মর্মে ভীতি প্রদর্শন করে যে, আমি যদি হত্যাকান্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ স্বীকারোক্তি না করি,তাহলে ওরা আমাকে উলঙ্গ করবে। আমার যেহেতুবলার মত কিছু ছিল না, কাজেই তারা আমার পরনের সমস্ত কাপড় চোপড় খুলে নেয় এবং সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় সেলের মধ্যে আটকে রাখে। আমাকে কোন খাবার দেওয়া হয়নি। এমন কি এক বিন্দু জলও না। ঐ সন্ধ্যায় স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য এসআইএর উপস্থিতিতে সিপাইরা এসেবন্দুকের বাট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে শুরু করে। সে সময় আমার নাক দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়তে থাকে।
এরপর ওরা আমার পরনের কাপড় চোপড় ফেরত দেয়। রাত প্রায় বারোটার সময় আমাকে বের করে সম্ভবত এসআইএর কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।অবশ্য এ ব্যাপারে আমি খুব বেশি নিশ্চিত ছিলাম না।আমাকে যে কামরায় নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে আমার স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য ওরা নৃশংস ধরনের পন্থা অবলম্বন করে। আমার চারপাশে দাঁড়িয়ে ওরা আমার পা দুটোকে লাঠির মধ্যে রেখে ক্রমাগতভাবে চাপ দিতে শুরু করে। ওদের ভাষায় আমার বিরুদ্ধে 'পাকিস্তানী ইনজেকশন' পন্থায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল। এ ধরনের অত্যাচার চলার সময় ওরা রুমাল দিয়ে আমার মুখ বেঁধে রেখেছিল এবং আমার চুল ধরেও টান দিচ্ছিল।কিন্তু আমাকে দিয়ে জোরপূর্বক কিছুই বলাতে সক্ষম হয়নি। এতসব অত্যাচারের দরুণ আমার পক্ষে আর হেঁটে যওয়া সম্ভব ছিল না। সিপাইরা আমাকে ধরাধরি করে সেলে নিয়ে গেল। এবার পুলিশের সেই দারোগা সিপাহীদের ৪টা গরম ডিম আনার নির্দেশ দিয়ে বলল যে, এবার মেয়েটাকে কথা বলতেই হবে। তারপর শুরু হল নতুন ধরনের অত্যাচার। ৪/৫ জন সিপাহী মিলে জোর করে আমাকে চিত্ হয়ে শুতে বাধ্য করল এবং ওদের একজন আমার গোপন অঙ্গ দিয়ে একটা ডিম ভিতরে ঢুকিয়ে দিল।
সে এক ভয়াবহ জ্বালা। প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করলাম, আমার ভিতরটা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। ১৯৫০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে আমার জ্ঞান ফিরে এলো। একটুপরে জনাকয়েক পুলিশ সঙ্গে করে আবার সেই দারোগার আগমন ঘটে। সেলে ঢুকেই সে আমার তলপেটে বুট দিয়ে প্রচন্ড জোরে লাথি মারে। আমি দারুণ ব্যথায় কুঁকড়ে গেলাম। এরপর ওরা জোর করেআমার ডান পায়ের গোড়ালি দিয়ে একটা লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দিল। আমি তখন অর্ধ-চৈতন্য অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছি। কোন রকম স্বীকারোক্তি না পেয়ে দারোগা তখন রাগে অগ্নিশর্মা। যাওয়ার আগে বলে গেল, আমরা আবার রাতে আসব। তখন তুমি স্বীকারোক্তি না দিলে, একের পর এক সিপাহী তোমাকে ধর্ষণ করবে। গভীর রাতে দারোগা আর সিপাহীরা আবার এলো এবং আবারো হুমকি দিল স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য। কিন্তু আমি তখনও কিছু বলতে অস্বীকার করলাম। এবার দু জন মিলে আমাকে মেঝেতে ফেলে ধরে রাখল এবং একজন সেপাহী আমাকে রীতিমত ধর্ষর্ণ করতে শুরু করল। অল্পক্ষণের মধ্যেই আমি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললাম...।" চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সৌজন্যে- বিপ্লবীদের কথা/
Leader
ReplyDelete