মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের অধিকাংশকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে দেশটির আপিল আদালত। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তারে রিপাবলিকান নেতার প্রধানতম হাতিয়ার এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক মার্কিন ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালতের ৭-৪ ভোটে দেওয়া এই রায়ে এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক এবং ফেব্রুয়ারিতে চীন, কানাডা, মেক্সিকোর ওপর আরোপিত আরেক দফা শুল্কের বৈধতা নিয়ে রায় দিয়েছে। রায়ের পক্ষে মত দেওয়া সাত বিচারপতির ছয়জন ডেমোক্র্যাট আর একজন রিপাবলিকান আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। আর রায়ের বিপক্ষে অবস্থানকারীদের মধ্যে দুজন ডেমোক্র্যাট ও দুজন রিপাবালিকান প্রশাসনের অধীনে নিয়োগ পেয়েছেন। অ বশ্য, অন্য আইনি কর্তৃপক্ষ আরোপিত শুল্ক, যেমন ট্রাম্পের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক, এই রায়ের প্রভাব নেই। হোয়াইট হাউজের দ্বিতীয় মেয়াদে শুল্ককে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির একটি মূল ভিত্তি বানিয়ে ফেলেছেন ট্রাম্প। ইচ্ছেমতো এই হাতিয়ার ব্যবহার করে তিনি বাণিজ্য অংশীদারদ...
http://metastead.com/64Nw
আইএসের যৌনদাসী থেকে শান্তিতে নোবেলজয়ী
নোবেল জয়ের পর নাদিয়া মুরাদ এখন ভাসছেন অভিনন্দনের জোয়ারে। কিন্তু যে জীবন তিনি পার করে এসেছেন, সেটি গা শিউরে উঠার মতো। উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন আইএস এই তরুণীকে যৌন দাসী বানিয়ে চালিয়েছে নির্যাতন।
ইরাকের ইয়াজেদি এই তরুণীকে এক পর্যায়ে বেঁচে থাকার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেন। পরেই সিদ্ধান্ত নেন ঘুরে দাঁড়ানোর। ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে আসেন আইএসের ডেরা থেকে। পরে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন ইসলামী খেলাফতের নামে কী নৃশংতা চালাচ্ছে আইএস। বই লিখে নিজের পাশাপাশি বহু ভুক্তভোগীর কথা তিনি তুলে ধরেন সেই বইয়ে। ইরাকের ইয়াজেদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারীকে বন্দি করে আইএস। তাদের মধ্যে ছিলেন নাদিয়া। তাদের সবাইকেই যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার অথবা বাজারে নিলামে বিক্রি করে দেয় আইএস। সেই ভয়াবহ জীবনের কথা উল্লেখ আছে নাদিয়ার আত্মজীবনী ‘দ্য লাস্ট গার্ল’য়ে। সেই বইয়ে নাদিয়া তার সংগ্রামের দিনগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। আর যেন কোনো নারী ধর্ষণের শিকার না হন সেইজন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আইএসের ডেরায় নরকযন্ত্রণার বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে নাদিয়া বলেন, ‘এ ঘটনা আমি ইচ্ছাকৃতভাবে বলেছি, তা নয়। বরং কাউকে না কাউকে লোমহর্ষক এই ঘটনা বলতেই হতো।’ নাদিয়া জানান, ২০১৪ সালে তাদের গ্রামে ঢোকে আইএস। তারা তার ছয় ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। পরে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী নারীদের সঙ্গে তাকে বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এই যাত্রা পথেই জঙ্গিরা শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানি করে।
নাদিয়া বলেন, ‘নরক থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েছিলাম। ধরা পড়তেই চলে গণধর্ষণ। ভেঙে পড়িনি। আমার মতোই হাজারো মহিলা জঙ্গিদের কব্জায় ছিল, এটাই আমাকে সাহস জুগিয়েছিল। নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতে থাকলাম এক দিন মুক্ত হবই।’
সেই সুযোগও এসে গেল এক দিন। এক জঙ্গি দরজা না আটকেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগান নাদিয়া। সোজা দৌড়। আর পেছনে ফিরে তাকাননি। নাদিয়া বলেন, ‘ধরা পড়লেই মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সাহসে ভর করে বেরিয়ে পড়েছিলাম। অন্ধকার রাস্তা ধরে বহু ক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে একটা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় চাই। সেই পরিবারই তাকে মসুল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।’
পরে ইরাক থেকে পালিয়ে ২০১৫ সালে জার্মানির শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন নাদিয়া। জানান, বহু ইয়াজেদি নারী এখনও আইএস জঙ্গিদের কবলে। ‘জানি কী দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন তারা। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই আজ সেই সব মেয়েদের কাহিনি তুলে ধরছি’-বইয়ের নানা কাহিনি তুলে ধরে বলেন নাদিয়া। বর্তমানে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই নোবেলজয়ী। হতে চান একজন মেকআপ আর্টিস্ট। নিজের একটা স্যাঁলো খুলতে চান। আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চান তিনি। এর আগে ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ মানবাধিকারবিষয়ক পুরস্কার শাখার পান নাদিয়া মুরাদ।
Comments
Post a Comment