বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে । পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বি জ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ (ফ্লাইট সেফটি)। এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি থাকবেন সদস্য হিসেবে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মহাব্যবস্থাপক (কর্পোরেট সেফটি অ্যান্ড কোয়ালিটি), চিফ ইঞ্জিনিয়ার (কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স), উপ-মহাব্যবস্থাপক (সিকিউরিটি), উপ-মহাব্যবস্থাপক (কার্গো-রপ্তানি) এবং উপ-ব্যবস্থাপক (ইন্স্যুরেন্স)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ চিহ্নিত করা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ, দায়-দায়িত্ব নিরূপণ এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তৈরি করবে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওর কাছে তদন্ত...
http://metastead.com/64Nw
আইএসের যৌনদাসী থেকে শান্তিতে নোবেলজয়ী
নোবেল জয়ের পর নাদিয়া মুরাদ এখন ভাসছেন অভিনন্দনের জোয়ারে। কিন্তু যে জীবন তিনি পার করে এসেছেন, সেটি গা শিউরে উঠার মতো। উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন আইএস এই তরুণীকে যৌন দাসী বানিয়ে চালিয়েছে নির্যাতন।
ইরাকের ইয়াজেদি এই তরুণীকে এক পর্যায়ে বেঁচে থাকার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেন। পরেই সিদ্ধান্ত নেন ঘুরে দাঁড়ানোর। ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে আসেন আইএসের ডেরা থেকে। পরে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন ইসলামী খেলাফতের নামে কী নৃশংতা চালাচ্ছে আইএস। বই লিখে নিজের পাশাপাশি বহু ভুক্তভোগীর কথা তিনি তুলে ধরেন সেই বইয়ে। ইরাকের ইয়াজেদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারীকে বন্দি করে আইএস। তাদের মধ্যে ছিলেন নাদিয়া। তাদের সবাইকেই যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার অথবা বাজারে নিলামে বিক্রি করে দেয় আইএস। সেই ভয়াবহ জীবনের কথা উল্লেখ আছে নাদিয়ার আত্মজীবনী ‘দ্য লাস্ট গার্ল’য়ে। সেই বইয়ে নাদিয়া তার সংগ্রামের দিনগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। আর যেন কোনো নারী ধর্ষণের শিকার না হন সেইজন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আইএসের ডেরায় নরকযন্ত্রণার বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে নাদিয়া বলেন, ‘এ ঘটনা আমি ইচ্ছাকৃতভাবে বলেছি, তা নয়। বরং কাউকে না কাউকে লোমহর্ষক এই ঘটনা বলতেই হতো।’ নাদিয়া জানান, ২০১৪ সালে তাদের গ্রামে ঢোকে আইএস। তারা তার ছয় ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। পরে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী নারীদের সঙ্গে তাকে বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এই যাত্রা পথেই জঙ্গিরা শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানি করে।
নাদিয়া বলেন, ‘নরক থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েছিলাম। ধরা পড়তেই চলে গণধর্ষণ। ভেঙে পড়িনি। আমার মতোই হাজারো মহিলা জঙ্গিদের কব্জায় ছিল, এটাই আমাকে সাহস জুগিয়েছিল। নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতে থাকলাম এক দিন মুক্ত হবই।’
সেই সুযোগও এসে গেল এক দিন। এক জঙ্গি দরজা না আটকেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগান নাদিয়া। সোজা দৌড়। আর পেছনে ফিরে তাকাননি। নাদিয়া বলেন, ‘ধরা পড়লেই মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সাহসে ভর করে বেরিয়ে পড়েছিলাম। অন্ধকার রাস্তা ধরে বহু ক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে একটা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় চাই। সেই পরিবারই তাকে মসুল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।’
পরে ইরাক থেকে পালিয়ে ২০১৫ সালে জার্মানির শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন নাদিয়া। জানান, বহু ইয়াজেদি নারী এখনও আইএস জঙ্গিদের কবলে। ‘জানি কী দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন তারা। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই আজ সেই সব মেয়েদের কাহিনি তুলে ধরছি’-বইয়ের নানা কাহিনি তুলে ধরে বলেন নাদিয়া। বর্তমানে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই নোবেলজয়ী। হতে চান একজন মেকআপ আর্টিস্ট। নিজের একটা স্যাঁলো খুলতে চান। আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চান তিনি। এর আগে ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ মানবাধিকারবিষয়ক পুরস্কার শাখার পান নাদিয়া মুরাদ।

Comments
Post a Comment