কমিশন চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাইলেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসনের ৫০ শতাংশ কোটা ইস্যুতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা)। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ দাবি জানান বিসিএস ৯ম ব্যাচের কর্মকর্তা জাকির হোসেন কালাম। তিনি বলেন, শুধু সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করলেই হবে না, সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে এ সংস্কার কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। এর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সোহেল রানা বলেন, উপসচিব পদে ৫০ শতাংশ হারে পদায়ন বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রমূলক। রাষ্ট্রকে দুর্বল করার কোনো প্রচেষ্টা চলছে কি না, এটাও আমাদের দেখতে হবে। এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তারা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচি...
গ্রেনেড হামলার রায়ের আগে মাঠ ছাড়ছে না আ.লীগ
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের আগে রাজপথ নিজেদের সক্রিয় অবস্থান রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এই রায়কে ঘিরে বিএনপি নাশকতার চেষ্টা করতে পারে-এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই কৌশল গ্রহণ করছে ক্ষমতাসীন দল।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টু। এই আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
১৪ বছর আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এ্ই মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামী ১০ অক্টোবর এবং এই রায়কে ঘিরে বিএনপিতে উদ্বেগ স্পষ্ট। এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারেক রহমানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে দেশবাসী তা মেনে নেবে না।
এরই মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ আগামী ১ অক্টোবর থেকে নেতা-কর্মীদেরকে ‘রেডি থাকতে’ বলেছেন। জানিয়েছেন, সরকার পতনের আন্দোলন সেদিন থেকে শুরু হবে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপি আসলে এই রায়কে ঘিরেই রাজপথে অবস্থান নিশ্চিত করতে চাইছে। আর কর্মীদের নাঠে নামাতেই নানা কর্মসূচির কথা বলছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জানান, সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে, আলোচিত এই মামলার রায়ের আগে ও পরে ২০১৩ ও ২০১৪ সালের মতো সারাদেশে নাশকতার চেষ্টা করতে পারে বিএনপি। তাই নাশকতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীরাও সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
১০ অক্টোবরের রায়ের আগে বিএনপিকে রাজধানীতে সভা সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। এরই মধ্যে ২৭ ও ২৯ সেপ্টেম্বর অনুমতি চেয়েও পায়নি তারা। এখন ৩০ সেপ্টেম্বর সমাবেশ করতে চায়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের আগেও এভাবেই সতর্ক অবস্থানে ছিল আওয়ামী লীগ। আর সে সময় বিএনপিকে কোনো কর্মসূচি পালনের অনুমতিও দেয়নি পুলিশ। এক পর্যায়ে যে কোনো ধরনের অবস্থান, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধও করা হয়। যদিও রায়ের পরে বিএনপির বক্তব্য এবং প্রতিক্রিয়া ছিল নমনীয়।
সম্প্রতি এক সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ১৪দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম ঢাকা দখলে রাখার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা এলাকায় প্রস্তুত থাকবেন, অপশক্তি যেন মাঠে নামতে না পারে। ওদের মাঠে প্রতিহত করবেন, রাস্তায় প্রতিহত করবেন।’
নেতা-কর্মীদের নাসিম আরও বলেন, ‘আগামী একটি মাস আপনাদের কোনো কাজ নেই। ১৪ দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পাড়া-মহল্লায় আপনারা সজাগ থাকবেন। কোনো চক্রান্ত বা নৈরাজ্য হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইনশা আল্লাহ আমরা প্রতিহত করব।’
তবে বিএনপিও যেমন মামলার রায়ের বিষয়টি এখনও সামনে আনছে না, তেমনি আওয়ামী লীগও এই রায়কে ঘিরে নিজেদের এই অবস্থানের কথা বলছে না। বরং তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করার কথা বলছে।
জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘ইতিমধ্যে আগামী ১ থেকে ৭ অক্টোবরের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর আরও নতুন কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগের সারাদেশের সব নেতাকর্মী।
বিএনপির পাশাপাশি তাদের সঙ্গে ঐক্যের আলোচনায় থাকা ড. কামাল হোসেনের উদ্যোগ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাওয়া যুক্তফ্রন্টের দিকেওন নজর থাকবে আওয়ামী লীগের।
কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ শনিবার গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সভার আহ্বান করেছে ১৪ দলীয় জোট। ১ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী দেশব্যাপী শুরু হবে গণসংযোগ।
নির্বাচনী প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দলের। শুরু হয়েছে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজ। অক্টোবরের মধ্যেই এসব কমিটি গঠন শেষ করার চেষ্টা করা হবে। কিছু কিছু জেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কেন্দ্ররক্ষা কমিটিও গঠন করা হবে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের মতো বাকি বিভাগগুলোতেও সাংগঠনিক সফর করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলায় জনসভায় করবেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফেরার পরই এ দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগে নির্বাচনী ট্রেনযাত্রায় বিপুল সাড়া পেয়েছি। নির্বাচনের আগে রংপুর বিভাগেও একটি নির্বাচনী সফরের চিন্তাভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় কিছু-কিছু জেলায় ঝটিকা সফর করছি। গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফর করি। সেখানে তিনটি সংসদীয় আসনে তিনটি জনসভায় অংশ নেই। এসব জনসভায় মূলত দলের নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
Comments
Post a Comment